সেদিন কাগজে একটি সংবাদ দেখে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। সুজিত বিস্বকর্মা নামে একজন অস্থায়ী বন কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্থ করা হয়েছে। বরখাস্থের চিঠিতে লেখা আছে ‘সুজিত বিস্বকর্মা সংবাদ পত্রে বিবৃতি দিয়েছেন। এই ‘অপরাধে’ তাকে চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়া হল।‘
এখন দেখতে হবে কে এই সুজিত বিস্বকর্মা। তিনি কি করতেন এবং তিনি কি বিবৃতি দিয়েছিলেন।
সুজিত বিস্বকর্মা একজন মাহুত। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি অস্থায়ী বন কর্মী হিসেবে মাহুতের কাজ করে আসছেন। বর্তমানে তিনি জলদাপাড়া উত্তর রেঞ্জের শিলতোর্ষা বিটে কর্মরত ছিলেন। তিনি ঐ বিটের গর্ভবতী হাতি রঙিণীর মাহুত।
তিনি বন্যপ্রাণ-৩ বিভাগের মেন্দাবাড়ি বিট থেকে গর্ভবতী রঙিণী হাতিটিকে নিয়ে গত ২৫ শে এপ্রিল শিলতোর্ষা বিটে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে প্রায়ই ১৬ মাসের গর্ভবতী হাতিকে দিয়ে বন রক্ষার কাজ করানো হত। বার বার বিশ্রামের কথা বলা সত্ত্বেও কেউ কর্ণপাত করেননি। এর পর একদিন তিনি একজন টি.ভি. সাংবাদিক কে বলেছিলেন “গর্ভবতী হাতিটিকে দিয়ে এখনো পরিশ্রম করানো হচ্ছে। জঙ্গল পাহাড়ার কাজে লাগানো হচ্ছে। ওর বিশ্রামের প্রয়োজন। কারন, বিশ্রাম না দিয়ে কাজ করানোয় গর্ভেই মারা গিয়েছিল ওর প্রথম সন্তান।“
হায় রে মাহুত বন্ধু, বন কে ভালো বেসে, বন্য প্রাণী কে ভালো বেসে তুমি যে মানবিক দৃষ্টান্ত তুলে ধরে ছিলে, তোমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার কি যোগ্য দাম দিলো? বরঞ্চ তোমার চাকরিটাই কেড়ে নিল।
আমি আগেই বলেছিলাম বনবিভাগের এক শ্রেণীর কর্মীদের জন্যই বন ও বন্যপ্রাণী ধংশ হয়ে যাচ্ছে।
সুখবর, গণমাধ্যমের প্রবল চাপের ফলে বন দপ্তর বাধ্য হয়েছে সুজিত বিশ্বকর্মার চাকরি ফিরিয়ে দিতে।
উত্তরমুছুন