“বিড়ল প্রজাতির বিড়াল উদ্ধার”, “স্কুল ঘর থেকে বিষাক্ত সাপ উদ্ধার”, “মিড-ডে মিলের চাল খেয়ে গেল দাঁতাল হাতি”, “রাজ পথে বাইসন”, “লোকালয়ে পাইথন”, “বিড়ল প্রজাতির প্যাঁচা উদ্ধার করল স্থানিয় বিজ্ঞান ক্লাবের সদস্যরা”
আজকাল খবরের কাগজ খুললে প্রায় রোজই চোখে পরে এই ধরনের কিছু সংবাদ। কখনো ভেবে দেখেছেন কি কেন এই হাতিরা মিড-ডে মিলের চাল খেতে স্কুলে আসে। এরা নিশ্চয় ছাত্র নয় বা বিষাক্ত সাপেরাও নিশ্চয় ক্লাস করতে স্কুলে আসে না। তবে এরা বন থেকে বেড়িয়ে এলো কেন?
আসলে বন্যরা এখন আর বনে সুন্দর নেই। বনকে এখন তারা আর নিরাপদ স্থান বলে মনে করতে পারছে না। দিন দিন বন কমে আসছে, খাবারের প্রচণ্ড অভাব। তার ওপর চোরাশিকারীর অত্যাচার। গোদের ওপর বিষফোরের মতন এখন আবার এক নতুন উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ট্রেনে কাটা পরে হামেশাই বন্যপ্রাণীদের মৃত্যু হচ্ছে। সম্ভবত এইসব ঘটনার প্রতিবাদ করতেই মঙ্গলবার রেল অবরোধ করল একটি হাতি। উত্তরবঙ্গ সংবাদের খবরটি এই রকম।
ডুয়ার্সের মধ্য দিয়ে যাওয়া রুটে মঙ্গলবার দফায় দফায় একাধিক ট্রেন অবরুদ্ধ হয়ে রইল একটি হাতির জন্য।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ডুয়ার্স হয়ে আলিপুরদুয়ার জংশনগামী রুটে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের কাছে বহু দরবার করা হয়েছে রাজ্যের বনদপ্তরের তরফে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কমিটি একাধিক সুপারিশও করেছে। কিন্তু কোনোটাই কার্যকর করা হয়নি। ফলে ট্রেনে কাটা পড়ে হাতি সহ অন্য বন্যপ্রাণীর মৃত্যুকেও আটকানো যায়নি। মঙ্গলবার সম্ভবত সেইসব ঘটনার প্রতিবাদ জানাল একটি হাতি, রেল অবরোধ করে।
এদিন সকালে নিউ জলপাইগুড়িগামী সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেসের চালক সেবক স্টেশন পেরিয়ে আসার পর গুলমার কাছাকাছি রেললাইনের উপর একটি হাতিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। দীর্ঘ হর্ণের আওয়াজ শুনে হাতিটি লাইন ছেড়ে পাশে সরে যায়। তবে তার আগে এক্সপ্রেস ট্রেনটি কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকে। পরে হাতিটি লাইন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর ট্রেনটি চলতে শুরু করলে হাতিটি ঘুরে দাঁড়িয়ে শুঁড় দিয়ে ইঞ্জিনে আঘাত করার চেষ্টা করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ট্রেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশ খানিকটা পথ দৌঁড়ায় হাতিটি। এবং শুঁড় দিয়ে ঘনঘন ট্রেনের কামরায় আঘাত করার চেষ্টা করে।
এরপর দুপুরে এবং বিকালে একটি মালগাড়ি এবং এনজেপি-আলিপুরদুয়ার প্যাসেঞ্জারেরও পথ অবরোধ করে হাতিটি। কিছুক্ষন অবরোধের পর অবশ্য লাইন ছেড়ে সরে যায় সে।
তবে কি মানুষের বনধ, অবরোধ সংস্কৃতি ছড়াল বন্যপ্রানীদের মধ্যেও?