রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০১০

প্রসঙ্গঃ চা

আমার ব্লগে বার বার চা-র প্রসঙ্গ আসে শুধু ভোর হলেই চাতক পাখির মতো চায়ের পেয়ালার জন্য চেয়ে থাকি বলে নয়। আসলে আমি কর্মসূত্রে চা-এর সাথে জড়িত। তাই কিছুটা দায়বদ্ধতা থেকে যায়। এই পানীয়টির জন্ম চীনে। ভারতবর্ষে চা গাছের গোড়াপত্তন ১৮২৩ সালে। নাম করতেই হবে রবার্ট ব্রুস, অসমের মণিরাম দেওয়ান এবং সেই সঙ্গে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের দ্বারকানাথ ঠাকুর মহাশয় এবং সিংফো জনজাতির প্রধানের ভূমিকা। অরুণাচল ও মায়ানমারের লাগোয়া পাটকই পাহাড়ের সানুদেশে জন্ম হল দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। অতঃপর অন্তহীন গবেষণা। চা-পানের কত রসালো গল্প। আর চা নিয়ে মধুর চর্চা, গম্ভীর আলোচনা, পরামর্শদাতা অবশ্যই লর্ড উইলিয়াম বেন্টিক। সময় ১৮৩৪। ১৮৩৭ সালে অসমে তৈরি চায়ের পেটি জাহাজে চাপিয়ে সমুদ্রযাত্রা ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। ব্রিটিশরা চা-বাগান সৃষ্টি করলেও বঙ্গ সন্তানরা পিছিয়ে ছিলেন না। ডাঃ ক্যাম্পবেল ১৮৪০-এ দার্জিলিংয়ে চা চাষে বিপ্লব ঘটান। তরাইয়ের প্রথম চা-বাগান ১৮৬২-তে নিউ চামটা। সুকনা যেতে দেখা যায়। ডুয়ার্সের প্রথম চা-বাগান ১৮৭৮-এ গজলডোবা। ভারতের নানা প্রান্তে চা-বাগান থাকলেও স্বাদে-গন্ধে দার্জিলিং আজও সবার সেরা।
চীন ও জাপানে প্রসাধনসামগ্রী হিসাবে চায়ের পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। চায়ের পাতা ভিজিয়ে সেই নির্যাসে নিয়মিত মুখ ধুলে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এক সময় ভারতে চায়ের নির্যাস দিয়ে চুলরং করার প্রদ্ধতি প্রচলিত ছিল। জাপানীরা ভিজে চা পাতা কাপড়ে বেঁধে চোখের উপর দিত যাতে চোখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। চায়ের নির্যাস কাপড়ে ভিজিয়ে কাঠের আসবাবপত্রে ঘষলে আসবাবপত্রে চাকচিক্য ফিরে আসে।

৩টি মন্তব্য:

Related Posts with Thumbnails
কপিরাইট © দেবাশিস গুহ, দেবপাড়া চা বাগান, বানারহাট, জলপাইগুড়ি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.